কোভিড-১৯ (Covid-19) ভ্যাকসিন আপডেট ২০২১ নিয়ে নিচে আলোচনা করা হলো। আসা করি তথ্যগুলো আপনাদের জন্য খুবই গুরত্বপূর্ণ হবে। তো চলুন কোভিড ভ্যাকসিন সম্পর্কিত তথ্যগুলো পড়ে নেওয়া যাক।
WHO অনুমােদিত ৮ম টিকা COVAXIN
৩ নভেম্বর ২০২১ বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (WHO) জরুরি ব্যবহারযােগ্য টিকা হিসেবে ভারতের ‘কোভ্যাক্সিন’ (COVAXIN) অনুমােদন দেয়। এটি WHO অনুমােদিত অষ্টম জরুরি ব্যবহারযােগ্য টিকা। ১ নভেম্বর ২০২১ অস্ট্রেলিয়া সরকার ‘কোভ্যাক্সিন’ গ্রহীতাদের তাদের দেশে প্রবেশের অনুমতি দেয়।
ভারতীয় সরকারের পৃষ্ঠপােষকতায় হায়দরাবাদের ভারত বায়ােটেক সম্পূর্ণ দেশি ফর্মুলায় এ টিকা তৈরি করে। এখন পর্যন্ত এটি ভারতের নিজস্ব প্রযুক্তিতে উৎপাদিত একমাত্র করােনা টিকা। COVAXIN দুই ডােজের করােনা টিকা। ১৫ ফেব্রুয়ারি ২০২১ WHO ভারতে উৎপাদিত অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকা উদ্ভাবিত করােনার টিকা COVISHIELD অনুমােদন দেয়।
এই বিভাগ থেকে আরো পড়ুন
- বৈদ্যুতিক গাড়ির যুগে বাংলাদেশ
- বায়ুবিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণে চুক্তি
- দেশের প্রথম স্পেশালাইজড হাসপাতাল
- কৃষকের সুরক্ষায় কিষানি ড্রোন
- দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন কর্মপরিকল্পনা
- বাংলাদেশের নারী শিক্ষায় মালালা ফান্ড
- জাতীয় কৃষি কাউন্সিল গঠন
- ইউক্রেন থেকে খাদ্যশস্য রপ্তানি শুরু
- বিশ্বে প্রথম দ্বৈত টিকার অনুমােদন
- যুক্তরাজ্যে নতুন বাণিজ্যনীতি
মডার্নার বুস্টার ডােজ
২৫ অক্টোবর ২০২১ ইউরােপীয় ইউনিয়নের (EU) ওষুধ পর্যবেক্ষণকারী সংস্থা European Medicines Agency (EMA) ১৮ বছরের বেশি বয়সীদের জন্য মডার্নার টিকার বুস্টার ডােজের অনুমােদন দেয়। অন্যদিকে যুক্তরাষ্ট্র ১৯ নভেম্বর ২০২১ প্রাপ্তবয়স্কদের জন্য ফাইজার ও মডার্নার বুস্টার ডােজের অনুমােদন দেয়।
টিকার প্রাথমিক ডােজ নেওয়ার পর সুরক্ষার মাত্রা কমে যাওয়ার আশঙ্কা থেকে এ বুস্টার ডােজের অনুমােদন দেওয়া হয়। দ্বিতীয় ডােজ টিকা নেওয়ার পর প্রাপ্তবয়স্কদের শরীরে অ্যান্টিবডির মাত্রা বেড়ে যায়। যাদের অ্যান্টিবডির মাত্রা কমে গেছে, তাদের ক্ষেত্রে টিকার বুস্টার ডােজটি কার্যকর হবে।
সিনেফার্ম-সিনােভ্যাকের তৃতীয় ডােজ
চীনের সিনােভ্যাক ও সিনােফার্মের তৃতীয় ডােজ টিকা দিতে সুপারিশ করেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (WHO)। ১১ অক্টোবর ২০২১ WHO’র টিকাবিষয়ক Strategic Advisory Group of Experts on Immunization (SAGE) এ সুপারিশ করে। SACE’র মতে, ৬০ বছরের বেশি বয়সী যারা সিনােভ্যাক ও সিনেফার্মের টিকা নিয়েছে, তাদের তৃতীয় ডােজ টিকা নেওয়া উচিত।
ইন্দোনেশিয়ায় টিকা অনুমােদন
১ নভেম্বর ২০২১ যুক্তরাষ্ট্রের বায়ােটেক প্রতিষ্ঠান নােভাভ্যাক্সের টিকা ইন্দোনেশিয়ায় জরুরি ব্যবহারের অনুমােদন পায়। ইন্দোনেশিয়াই প্রথম নােভাভ্যাক্সের টিকার অনুমােদন দেয়।
শিশুদের জন্য টিকা
বাধ্যতামূলক : ৫ নভেম্বর ২০২১ বিশ্বের প্রথম দেশ হিসেবে শিশুদের জন্য করােনা টিকা বাধ্যতামূলক করে কোস্টারিকা। এরই মধ্যে আইন ও স্বাস্থ্যবিধি মােতাবেক শিশুদের জন্য টিকার অনুমােদন দেয় দেশটি। ২০২২ সালের মার্চ থেকে ১২ বছরের নিচে সব শিশুকে করােনার টিকা দেওয়া হবে।
অনুমােদন : ২৯ অক্টোবর ২০২১ মার্কিন ওষুধ নিয়ন্ত্রক সংস্থা Food and Drug Administration (FDA) ৫-১১ বছর বয়সী শিশুদের জন্য ফাইজার-বায়ােএনটেকের করােনার টিকা ব্যবহারের অনুমােদন দেয়। উল্লেখ্য, ১ নভেম্বর ২০২১ বাংলাদেশে ১২-১৭ বছরের শিক্ষার্থীদের ফাইজার-বায়ােএনটেকের টিকা দেওয়া শুরু হয়।
করােনা চিকিৎসায় ট্যাবলেট
৪ নভেম্বর ২০২১ যুক্তরাজ্যের ওষুধ নিয়ন্ত্রক সংস্থা Medicines and Healthcare products Regulatory Agency (MHRA) করােনায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসায় প্রথমবারের মতাে কোনাে ট্যাবলেট ব্যবহার করার অনুমােদন দেয়। ট্যাবলেটটির নাম মলনুপিরাভির (Molnupiravir) মার্কিন ওষুধ কোম্পানি MerckSharp & Dohme (MSD) এবং Ridgeback Biotherapeutics এর মলনুপিরাভির করােনা চিকিৎসায় প্রথম অ্যান্টিভাইরাল ট্যাবলেট, যা ইনজেকশনের মাধ্যমে পুশ না করে ওষুধ হিসেবে খাওয়া যাবে। বিশ্বে যুক্তরাজ্যই প্রথম দেশ, যেখানে করােনার চিকিৎসায় একটি অ্যান্টিভাইরাল ওষুধ ব্যবহারের অনুমােদন দেয়।
বাংলাদেশে অনুমােদন :
৮ নভেম্বর ২০২১ দেশে করােনা চিকিত্সায় মলমুপিরাভির অ্যান্টিভাইরাল ট্যাবলেট জরুরি ব্যবহারের অনুমােদন দেয় সরকার। এরপর ৯ নভেম্বর ২০২১ ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরের (DGDA) মহাপরিচালক মাহবুবুর রহমান জানান, দেশের তিনটি ফার্মাসিউটিক্যাল কোম্পানিকে প্রথমবারের মতাে করােনার ওষুধ মলনুপিরাভির বাজারজাতকরণের অনুমােদন দেওয়া হয়। কোম্পানিগুলাে হলাে- এসকায়েফ ফার্মাসিউটিক্যালস লি. বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালস লি. ও স্কয়ার ফার্মাসিউটিক্যালস লি. সর্বশেষ ১৬ নভেম্বর ২০২১ এ ওষুধের আনুষ্ঠানিক ছাড়পত্র দেওয়া হয়।
মলনুপিরাভির কী?
মলনুপিরাভির এক ধরনের ট্যাবলেট বা বড়ি যা করােনাভাইরাসের চিকিত্সায় দিনে দুইবার ঝুঁকিপূর্ণ রােগীদের দেওয়া হয়। মূলত, এই ওষুধটি ফ্লু-এর চিকিত্সার জন্য তৈরি করা হয়। ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল অনুযায়ী, ওষুধটি রােগীদের হাসপাতালে ভর্তি ও মৃত্যুঝুঁকি অর্ধেক কমিয়ে দেয়। করােনাভাইরাসের চিকিত্সায় এটাই প্রথম মুখে খাওয়ার ওষুধ। করােনার উপসর্গ দেখা দেওয়ার পাঁচ দিনের মধ্যে ওষুধটি খেলে সবচেয়ে ভালাে ফলাফল পাওয়া যায়।