ইন্ডাস্ট্রিয়াল ফার্মাসিস্ট ডিপার্টমেন্ট বা বিভাগের সংক্ষিপ্ত পরিচিতি

Preparation BD
By -
3 minute read
0
ads banner

দেশের অর্থনীতিতে ঔষধ শিল্পের ভূমিকা অনেক । চাহিদার সঙ্গে তাল মিলিয়ে প্রতিনিয়ত বাড়ছে এর সক্ষমতা । দেশের প্রায় ৯৮% ঔষধের চাহিদা মিটিয়ে আন্তর্জাতিক বাজার সম্প্রসারণে চলছে নিরন্তর প্রয়াস । যার নেপথ্যে রয়েছেন দেশের ফার্মাসিস্টরা। তারাই ইন্ডাস্ট্রিয়াল ফার্মাসিস্ট। এ খাতে প্রতিনিয়ত বাড়ছে দক্ষ জনবলের চাহিদা । মূলত কারখানা বা প্ল্যান্টের সঙ্গে যুক্ত বিভিন্ন ডিপার্টমেন্টে ফার্মাসিস্টদের কাজের সুযোগ রয়েছে। সেসব ডিপার্টমেন্ট বা বিভাগের সংক্ষিপ্ত পরিচিতি নিম্নে দেওয়া হলো—

আরঅ্যান্ডডি

প্রোডাক্ট ডেভেলপমেন্ট বা রিসার্চ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট (আরঅ্যান্ডডি) ডিপার্টমেন্ট মূলত নতুন একটি ঔষধ উৎপাদনের জন্য ঔষধটির ফর্মুলেশন ডেভেলপ করে থাকে। এজন্য সকল ইনিশিয়াল রিসার্চ ও ইমপ্লিমেন্টেশনের কাজ করে থাকে এ ডিপার্টমেন্ট। আরঅ্যান্ডডি ডিপার্টমেন্টই মূলত প্রথম কোনো ঔষধ ছোট পরিসরে তৈরি করে এবং পরে সেটাকে উৎপাদন বিভাগ বড় পরিসরে তৈরি করে। নতুন পণ্য বাজারে নিয়ে আসার চাহিদা প্রদান করে মার্কেটিং বিভাগ।

প্রোডাকশন

প্রোডাকশন ডিপার্টমেন্ট ঔষধ তৈরিতে সরাসরি যুক্ত। এ বিভাগে সবচেয়ে বেশি জনবল কাজ করে । প্লান্টের প্রায় সকল বিভাগই মূলত প্রোডাকশন ডিপার্টমেন্টের সহায়ক হিসেবে কাজ করে ।

কোয়ালিটি কন্ট্রোল

কোয়ালিটি কন্ট্রোল ডিপার্টমেন্ট উৎপাদিত ঔষধের মান নিয়ন্ত্রণের জন্য সকল পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে। সেইসঙ্গে কাঁচামাল ও প্রস্তুতকৃত ঔষধের মান পরীক্ষা করে। কাঁচামালগুলোর স্পেসিফিকেশন অনুযায়ী সব ঠিকঠাক আছে কি না, ইন্টারমিডিয়েট বা বাল্ক প্রোডাক্টের টেস্ট এসবও এ বিভাগের কাজ । কোয়ালিটি কন্ট্রোল ডিপার্টমেন্ট জটিল অনেক যন্ত্রপাতি নিয়ে কাজ করে।

[penci_related_posts dis_pview=”no” dis_pdate=”no” title=”এই বিভাগ থেকে আরো পড়ুন” background=”” border=”” thumbright=”no” number=”4″ style=”list” align=”none” withids=”” displayby=”cat” orderby=”rand”]

তাই এখানে মেশিনারিজের কাজ শেখার সুযোগ থাকে। এর মধ্যে সবচেয়ে কমন হচ্ছে এইচপিএলসি। এছাড়া আরও বিভিন্ন যন্ত্রপাতি থাকে। কোয়ালিটি কন্ট্রোল ডিপার্টমেন্ট থেকে রিসার্চ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট/প্রোডাক্ট ডেভেলপমেন্ট (অ্যানালিটিক্যাল) বিভাগে সহজে চাকরি পরিবর্তন করা যায়। এছাড়া ওয়্যারহাউস বা পিপিআইসি, ভ্যালিডেশন ডিপার্টমেন্ট থাকে যেখানে ফার্মাসিস্টদের কাজের সুযোগ রয়েছে ।

কোয়ালিটি অ্যাসিওরেন্স

কোয়ালিটি অ্যাসিওরেন্স তথা গুণগত মান নিশ্চিতকরণ বিভাগের মূল কাজ হলো পণ্যের কোয়ালিটি ঠিক আছে কি না তা যাচাই করা। এ নিয়ে কোনো বিশেষ ইস্যু তৈরি হলে তার জবাবদিহি করতে হয় এই বিভাগকেই ।

নিয়োগ পদ্ধতি

প্ল্যান্ট জবের ক্ষেত্রে নিয়োগ পদ্ধতি একেক কোম্পানিতে একেক রকম । ফ্রেশারদের নিয়োগের ক্ষেত্রে প্রথমে বিভিন্ন পদ্ধতিতে সিভি সংগ্রহ করা হয়। তারপর সর্টিং করে যোগ্য প্রার্থীদের লিখিত পরীক্ষায় অংশগ্রহণের সুযোগ দেওয়া হয়। লিখিত পরীক্ষায় ভালো করা প্রার্থীরা প্রথম ভাইভাতে অংশগ্রহণের সুযোগ পায়। প্রথম ভাইভাতে মূলত একাডেমিক ও পারসোনাল বিষয়গুলো প্রাধান্য পায়। পরবর্তীতে চূড়ান্ত ভাইভার জন্য ডাকা হয় । সেখানে স্যালারি নেগোসিয়েশন, কোম্পানি পলিসি, সুযোগ-সুবিধা, কাজ সম্পর্কিত বিষয় প্রাধান্য পায়। কিছু ক্ষেত্রে অভিজ্ঞতাসম্পন্ন প্রার্থীদের ক্ষেত্রে লিখিত ও একটি ভাইভা অথবা শুধু ভাইভা নিয়েও নিয়োগ দেওয়া হয়।

লিখিত পরীক্ষা

বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে বিভিন্ন পদ্ধতিতে লিখিত পরীক্ষা হয়। কোথাও শর্ট নোটস আকারে, এমসিকিউ, কিছু ক্ষেত্রে অনলাইনে আবার কিছু প্রতিষ্ঠানে সিঙ্গেল বা গ্রুপ প্রেজেন্টেশনও নেওয়া হয় ।

চাকরির বিজ্ঞপ্তি

চাকরির বিজ্ঞপ্তিগুলো বিভিন্ন জব পোর্টালে দেওয়া হয়। সেইসঙ্গে বিভিন্ন কোম্পানির নিজস্ব ওয়েবসাইটের ক্যারিয়ার অংশে, লিংকড-ইন পেজ ও জব রিলেটেড বিভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়া গ্রুপ থেকেও পাওয়া যায় । কিছু ক্ষেত্রে অভ্যন্তরীণ যোগাযোগের মাধ্যমেও সোর্স করা হয়। এ ক্ষেত্রে নিজ ক্যাম্পাসের অ্যালামনাইরা সহায়তা করতে পারেন ।

ফার্মাসিস্টদের চাকরির প্রস্তুতি

প্ল্যান্টে ফার্মাসিস্টদের কাজ করার জন্য শিক্ষাগত যোগ্যতা বি.ফার্ম, বি.ফার্ম প্রফেশনাল, এম.ফার্ম প্রয়োজন হয় । কিছুক্ষেত্রে এম.ফার্ম ও পূর্ব অভিজ্ঞতাসম্পন্ন প্রার্থীদের প্রাধান্য দেওয়া হয়। প্ল্যান্ট জবের প্রস্তুতির ক্ষেত্রে বি.ফার্ম সিলেবাসের বিভিন্ন কোর্স যেমন- ফার্মাসিউটিক্যাল টেকনোলজি, ফার্মাসিউটিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং, অ্যানালিটিক্যাল কেমিস্ট্রি, কোয়ালিটি অ্যাসিওরেন্স এসব বিষয়ের ওপর ভালো দক্ষতা থাকা প্রয়োজন । এছাড়া ডিপার্টমেন্ট ভেদে ইন্টারনেটে বিভিন্ন রিসোর্স পাওয়া যায়, সেগুলোর সাহায্য নেওয়া যেতে পারে।

এ পেশার সম্ভাবনা অনেক। বাংলাদেশের ঔষধ শিল্পের প্রবৃদ্ধির এবং রপ্তানি বৃদ্ধির হার ঊর্ধ্বমুখী। যদিও কিছু চ্যালেঞ্জ রয়েছে, তারপরও এ দ্রুত বর্ধনশীল শিল্প খাতে দক্ষ জনবলের চাহিদা প্রচুর ।

ads banner

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0মন্তব্যসমূহ

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন (0)

#buttons=(Accept !) #days=(20)

Our website uses cookies to enhance your experience. Check Now
Accept !
Today | 15, April 2025