চীনের সুবাদে বর্তমানে আলোচিত একটি বিষয় প্রাসাদ কূটনীতি। বেশ কয়েক বছর ধরে চীন আফ্রিকার দেশগুলোর সঙ্গে সম্পর্ক জোরদারের চেষ্টা করছে। দেশটি নিজ খরচে আফ্রিকার বিভিন্ন দেশে সরকারি ভবন তৈরি বা সংস্কার করে।
পররাষ্ট্রনীতি বিশেষজ্ঞরা চীনের এ কৌশলের নাম দেন ‘প্রাসাদ কূটনীতি’ । ৩০ জুন ২০২২ জিম্বাবুয়ের রাজধানী হারারেতে ৩৩,০০০ বর্গমিটার জায়গাজুড়ে নির্মিত নতুন পার্লামেন্ট ভবন উদ্বোধন করা হয়। ভবনটির নির্মাণকাজ পরিচালনা ও অর্থায়ন করে চীন। ২০১৯ সালে একইভাবে ২ কোটি ২০ লাখ ডলার ব্যয়ে বুরুন্ডির প্রেসিডেন্ট প্রাসাদ তৈরি করে চীন ।
শুধু জিম্বাবুয়ে বা বুরুন্ডিই নয়, মোজাম্বিক, লেসোথো, গিনি-বিসাউ, মালাউইসহ বেশ কয়েকটি দেশে চীনের সৌজন্যে নতুন পার্লামেন্ট ভবন তৈরি হয়। যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক চিন্তনপ্রতিষ্ঠান হেরিটেজ ফাউন্ডেশনের এক গবেষণা অনুযায়ী, আফ্রিকা মহাদেশে এমন অন্তত ১৮৬টি সরকারি ভবন আছে, যেগুলো তৈরিতে চীন কম-বেশি অর্থায়ন করেছে বা নির্মাণ করেছে ।
গত দুই দশকে চীনের অর্থনীতি অনেক বেশি দৃঢ় হওয়ায় এই ধরনের নির্মাণকাজের সংখ্যা দ্রুত বাড়ছে । মূলত আফ্রিকা অঞ্চলের দরিদ্রতার সুযোগকে কাজে লাগিয়ে বড় ভবন নির্মাণের সঙ্গে যুক্ত হয়ে চীন তথাকথিত প্রাসাদ কূটনীতি চালায় ।
২০১৮ সালে ফরাসি দৈনিক লা মঁদের এক প্রতিবেদনে, রাষ্ট্রীয় গোপন তথ্য শোনার জন্য ইথিওপিয়ার রাজধানী আদ্দিস আবাবায় আফ্রিকান ইউনিয়নের সদর দপ্তরে চীনের আড়ি পাতার অভিযোগ করা হয় ।
আফ্রিকান ইউনিয়নকে এই সদর দপ্তরটি উপহার দেয় চীন। যদিও আফ্রিকান ইউনিয়ন ও চীন সরকার এ অভিযোগ অস্বীকার করে । চীনের নানা উদ্যোগের প্রাথমিক উদ্দেশ্য হলো, আফ্রিকা মহাদেশে চীনের ভূরাজনৈতিক প্রভাব বিস্তার। মহাদেশটিতে যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপের মতো প্রতিদ্বন্দ্বীদের প্রভাব কমানোর উদ্দেশ্যেই তাদের এ প্রাসাদ কূটনীতি।