সাংহাই বন্দর : বর্তমান বিশ্বের সবচেয়ে ব্যস্ততম বন্দর ধরা হয় চীনের এই সমুদ্রবন্দরকে। ২০০৫ সালে ইয়াংশানে গভীর সমুদ্রবন্দর প্রতিষ্ঠিত হলে এই বন্দরের গুরুত্ব আরও বেড়ে যায়।
জেবেল আলি বন্দর : সংযুক্ত আরব আমিরাতের এই বন্দর মধ্যপ্রাচ্যের সবচেয়ে বড় এবং ব্যস্ততম সমুদ্রবন্দর। ১৯৭৯ সালে রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথ এটির উদ্বোধন করেন। এই বন্দরের গভীরতার কারণে যুক্তরাষ্ট্রের নৌবহরের জাহাজগুলাে এখানে সবচেয়ে বেশি আসে।
সিঙ্গাপুর : সাংহাইয়ের পর বিশ্বের দ্বিতীয় ব্যস্ততম বন্দর সিঙ্গাপুর বন্দর। ১৮১৯ সালে স্থাপিত হওয়া এই বন্দর দিয়ে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার বিশাল অংশের বাণিজ্য সম্পাদিত হয়।
রটারডাম : নেদারল্যান্ডসের এই সমুদ্রবন্দর ইউরােপের সবচেয়ে বড় বন্দর। চতুর্দশ শতাব্দীতে চালু হওয়া এই বন্দরের আয়তন ১০৫ বর্গকিলােমিটার।
হাম্বানটোটা : শ্রীলঙ্কার দ্বিতীয় বৃহত্তম এই বন্দর বর্তমানে চীনের দখলে। শ্রীলঙ্কা সরকার চীন থেকে নেওয়া ঋণ সময়মতাে পরিশােধ করতে না পারায় ২০১৭ সালে চীন এই বন্দর ৯৯ বছরের জন্য ইজারা নেয়।
জেদ্দা : সৌদি আরবের সবচেয়ে বড় এবং মধ্যপ্রাচ্যের দ্বিতীয় বৃহত্তম এবং ব্যস্ততম বন্দর এটি। লােহিত সাগরের পাশে অবস্থিত এই বন্দরের মাধ্যম সৌদি আরবের ৬৫ শতাংশ আমদানি সম্পন্ন হয়।
চাবাহার : ওমান উপসাগরের পাশে অবস্থিত ইরানের এই বন্দর রাজনৈতিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ একটি বন্দর। ২০০৩ সালে ইরান ও ভারতের মধ্যে একটি চুক্তি হয়, যার মাধ্যমে ভারত এই বন্দরের উন্নয়নের জন্য বিনিয়ােগের প্রতিশ্রুতি দেয়। পরবর্তী সময়ে এই বন্দর নিয়ে ভারত, ইরান ও আফগানিস্তানের মধ্যে একটি চুক্তি হয়। এর মধ্য দিয়ে ভারত ও আফগানিস্তানের বাণিজ্যের পথ সুগম হবে এবং ভারতের পক্ষে সহজে মধ্য এশিয়ায় বাণিজ্য করা সম্ভব হবে।
গদর: আরব উপসাগরের তীরে অবস্থিত এই বন্দর একটি গভীর সমুদ্রবন্দর। পাকিস্তানের বন্দর হলেও এই বন্দর নির্মাণে সহযােগিতা করছে চীন। এতে চীনের জন্য মধ্যপ্রাচ্যে যােগাযােগ স্থাপন আরও সহজ হবে। মূলত চীনের মাধ্যমে তাদের ওয়ান বেল্ট ওয়ান রােড প্রকল্প বাস্তবায়নে আরও এগিয়ে যাবে।
মােম্বাসা : কেনিয়ার এই সমুদ্রবন্দর ঐতিহাসিকভাবে অনেক গুরুত্বপূর্ণ। এই বন্দর পূর্ব আফ্রিকার সবচেয়ে বড় বন্দর। দাসপ্রথা চলাকালীন এই বন্দর দিয়েই পূর্ব আফ্রিকা থেকে দাসদের নিয়ে যাওয়া হতাে।
পাের্ট সাইদ: মিসরের এই বন্দর আন্তর্জাতিকভাবে খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি বন্দর শহর। সুয়েজ খালের সর্ব উত্তরের এই বন্দর থেকেই সুয়েজ খালের শুরু। ১৮৫৯ সালে সুয়েজ খাল নির্মাণের সময় এই বন্দর শহরে প্রতিষ্ঠা হয়।
হাইফা : ইসরায়েলের এই বন্দর প্রাচীনকাল থেকেই নাবিকদের জন্য এক আশ্রয়স্থল ছিল। ১১০০ সালে ক্রুসেডাররা হাইফা দখল করে নিলে এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ বন্দর হয়ে ওঠে। পরবর্তী সময়ে বন্দরটি বন্ধ হয়ে গেলেও ১৯৩৩ সালে এটি আবার চালু করা হয় এবং বর্তমানে ইসরায়েলের সবচেয়ে বড় সমুদ্রবন্দর এবং নৌঘাঁটি এটি।
কালিনিনগ্রাদ: কালিনিনগ্রাদ সমুদ্রবন্দরটি রাশিয়ার একমাত্র বরফবিহীন সমুদ্রবন্দর। রাশিয়ার সব সমুদ্রবন্দর শীতকালে সম্পূর্ণ বরফাচ্ছাদিত থাকে, সে জন্য বাল্টিক সাগরের তীরের কালিনিনগ্রাদ বন্দরটি রাশিয়ার জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
ওডেসা : ওডেসা ইউক্রেনের দক্ষিণে অবস্থিত কৃষ্ণসাগরের তীরে একটি বন্দর শহর। ওডেসা ইউক্রেনের জন্য সামরিক ও অর্থনৈতিকভাবে খুবই গুরুত্বপূর্ণ। ২০১৪ সালে রাশিয়া ক্রিমিয়া দখল করে নিলে ইউক্রেন সেভাস্তোপলে তাদের নৌঘাঁটি হারায়। এরপর তারা তাদের সদর দপ্তর এই ওডেসাতে স্থানান্তর করে। রাশিয়া যদি ওডেসা দখল করে নেয়, তাহলে কার্যকরভাবে ইউক্রেনকে বিদেশি বাণিজ্য ও সামরিক সাহায্য থেকে সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন হয়ে যাবে।
সেভাস্তোপােল : ১৭৮৩ সালে প্রতিষ্ঠিত সেভাস্তোপােল শহরটি এর কৌশলগত অবস্থানের কারণে, ইতিহাসজুড়ে একটি গুরুত্বপূর্ণ বন্দর এবং নৌঘাটি ছিল। ক্রিমিয়ার বৃহত্তম এই শহরে বন্দর প্রতিষ্ঠা করা হয় নৌঘাঁটি হিসেবে ব্যবহার করার জন্য। রাশিয়া ২০১৪ সালে ক্রিমিয়া দখল করে নিলে সেভাস্তোপােলকেও তাদের দখলে নিয়ে নেয়। রাশিয়ার দখলের আগে সেভাস্তোপােলে ইউক্রেনের নৌবাহিনীর ঘাঁটি ছিল, যা পরে ওডেসাতে স্থানান্তর করা হয়।