রাগ নিয়ন্ত্রণের কার্যকর উপায়

Preparation BD
By -
0

রাগ নিয়ন্ত্রণের কার্যকর উপায় : রাগ একটি স্বাভাবিক আবেগ। তবে মাত্রাতিরিক্ত রাগ আমাদের সুন্দর সম্পর্কগুলাে নষ্ট করে। কর্মজীবনসহ জীবনের সকল ক্ষেত্রে নেতিবাচক প্রভাব ফেলে। রাগ দিয়ে কোনাে সমস্যার সমাধান করা সম্ভব নয়ই বরং তা সমস্যা আরও বাড়িয়ে দেয়। তাই রাগ নিয়ন্ত্রণ করা একটি অপরিহার্য বিষয়। রাগ নিয়ন্ত্রণে নিয়ে বর্ণিত কৌশল বা পদ্ধতিগুলাে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।

কথা বলার আগে সময় নিন

রাগ উঠলে কিছু বলার আগে কয়েক মুহুর্ত সময় নিন। যদি কথা বলতেই হয় তবে ভেবেচিন্তে বলুন। কারণ এ জন্য নতুন ও বড় আকারের ঝামেলা সৃষ্টি হতে পারে।

মনােযােগ অন্যদিকে সরিয়ে নিন

হঠাৎ করে রাগের মাথায় কোনাে কথা বা কাজ করে বসবেন না। সাধারণ ভদ্রতা দেখিয়ে তার সামনে থেকে চলে আসুন বা নিজের মনকে অন্যদিকে সরিয়ে নিন।

একটু হেঁটে আসুন

একেবারেই রাগ সামলাতে না পারলে অল্প সময়ের জন্য হলেও একটু হেঁটে আসুন। এতে রাগ বাড়ার সুযােগই তৈরি হবে না এবং আপনার মনও একটু শান্ত হওয়ার সুযােগ পাবে।

ইতিবাচক চিন্তা করুন

প্রতিটি ঘটনার একটা ভালাে দিক আছে। সেটা চিন্তা করে বের করুন। যাই ঘটুক ঘটনার নেতিবাচক দিক না খুঁজে ইতিবাচক দিক খেয়াল করুন। যাতে রেগে যেতে না হয়।

ক্ষমা করতে শিখুন

মানুষ ভুল করবে এটাই স্বাভাবিক। তাই কারাে ভুলের জন্য রেগে যাওয়া বুদ্ধিমানের কাজ না। রাগ পুষে না রেখে তাকে ক্ষমা করে দিন। এতে পরবর্তীতে আপনার নিজেরই ভালাে লাগবে।

মেনে নেওয়ার অভ্যাস গড়ুন

সব সমস্যার সমাধান হয় না, কিছু প্রশ্নের উত্তর হয় না। তাই মেনে নেওয়ার ক্ষমতা বাড়ান। মেনে নেওয়া মানেই হেরে যাওয়া নয়। জীবনে অপ্রাপ্তির পাশাপাশি অনেক প্রাপ্তিও আছে, সেদিকে মনােযােগ দিন।

মাথা ঠান্ডা হলেই রাগের প্রকাশ করুন

তখনই আপনি রাগ প্রকাশ করুন, যখন বিষয়টি নিয়ে ভাবতে পারছেন। যত রাগই হােক, অন্যকে অপমান করা কাজের কথা নয়।

রিল্যাক্সড হওয়ার চেষ্টা করুন

রিল্যাক্সেশনের মাধ্যমে রাগ নিয়ন্ত্রণ করা সহজ হয়। এ সময় জোরে জোরে গভীর নিঃশ্বাস ফেলুন। গান শুনুন, বই পড়ুন, আপনার যা যা করতে ভালাে লাগে তা করুন।

মানসিকভাবে স্থির থাকুন

মানসিক অস্থিরতা অতিরিক্ত রাগের একটি কারণ। মানসিক অস্থিরতায় সব কিছু ভুল মনে হয়। ফলে আমরা সামান্যতেই রেগে যাই। তাই মানসিকভাবে স্থির থাকুন।

Mentors’ Speech

অতিরিক্ত রাগ জীবনে নেতিবাচক প্রভাব ফেলে। রাগকে নিয়ন্ত্রণ করতে বিশিষ্ট মার্কিন মনােবিজ্ঞানী রেমন্ড চিপ টাফ্রেট ও হাওয়ার্ড ক্যাসিনভ তাদের ‘Anger Management for Everyone’ বইয়ে ১০টি বিষয় তুলে ধরেছেন। যার উল্লেখযােগ্য কয়েকটি হলাে—

  • জীবনকে নিয়ন্ত্রণ করা
  • সমস্যার সমাধান খোঁজা।
  • রাগকে নিয়ন্ত্রণে চিন্তাধারায় পরিবর্তন আনা
  • ক্ষমা করা।
  • রিল্যাক্সেশনের মাধ্যমে মনকে স্থির করা
  • রাগ সংবরণের কার্যকর কৌশল আয়ত্ত করা

সমাধান খোঁজার চেষ্টা করুন

পৃথিবীতে কারণ ছাড়া কোনাে কিছুই ঘটে না। সমস্যা থাকলে তার সমাধানও থাকবে। তেমনি আপনার রাগ হওয়ার কারণ থাকলে অবশ্যই। তার সমাধান খুঁজে বের করে অতিরিক্ত রাগ পরিহার করুন।

রাগ না হওয়ার প্রতিজ্ঞা করুন

যাই কিছু হােক আমি রাগবাে না- এ প্রতিজ্ঞাটা নিজেই নিজের কাছে করুন। রাগের পরিস্থিতি তৈরি হলে মনে মনে নিজে নিজেকে পরামর্শ দিতে থাকুন যে আমি রাগবাে না। এতে রাগ নিয়ন্ত্রণ করা সহজ হবে।

রসবােধ বাড়ান

সবসময় সিরিয়াস না থেকে মাঝে মাঝে মজা করুন, কৌতুক করুন, পরিবেশকে হালকা করুন। রাগ হওয়ার অবস্থা তৈরি হচ্ছে বুঝতে পারলে সেটা স্বাভাবিক করার জন্য মজার কিছু করার চিন্তা করুন।

সংখ্যা উল্টো দিকে গণনা করুন

কোনাে কারণে রেগে গেলে বা রাগের পরিস্থিতি সৃষ্টি হলে মনে মনে ‘90 second rule’ (৯০ থেকে উল্টো দিকে সংখ্যা গণনা) পদ্ধতি অনুসরণ করুন।

মনােবিজ্ঞানীদের সাহায্য নেওয়া

উপরিউক্ত পদ্ধতিগুলাে চেষ্টা করে যদি রাগ নিয়ন্ত্রণে আনতে না পারেন, তবে মনােবিজ্ঞানীর সহায়তা নিতে পারেন । রাগ শুধু মানসিক স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর নয়, মানুষকে জ্ঞান, বিবেক ও ধর্মের পথ থেকেও বিচ্যুত করে। রাগের কারণে মানুষের আচার-আচরণ ও চিন্তায় খারাপ প্রভাব পড়ে। তাই যেকোনাে পরিস্থিতিতে রেগে না গিয়ে নিজেকে সংযত রাখার কোনাে বিকল্প নেই।

Tags:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0মন্তব্যসমূহ

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন (0)

#buttons=(Accept !) #days=(20)

Our website uses cookies to enhance your experience. Check Now
Accept !