পরিকল্পনা করে শুরু হােক ক্যারিয়ার

Preparation BD
By -
0

কথা কম বলা মন্দ নয়। তাই বলে পরামর্শবিহীন সিদ্ধান্ত গ্রহণ কিংবা প্রয়ােজনেও মুখ না খােলার অভ্যাসকে তাে কিছুতেই ভালাে বলা যায় না। তবে অতিরিক্ত কথা বলার অর্থই চিন্তা কম করা, যা কম বুদ্ধিমানেরাই করে থাকে। যে ক্ষুদ্র চিন্তা করে তার কাছ থেকে বৃহৎ কিছু আশা করা যায় না। আবার যে বড় চিন্তা করবে এবং চিন্তার আলােকে কর্মপ্রচেষ্টা চালাবে, সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা নিয়ে নির্দিষ্ট লক্ষ্যে ছুটবে, সে ছােট থাকবে এটাও যুক্তিসঙ্গত হতে পারে না।

আরাে বিস্তারিত জানাচ্ছে ফাতেমা খাতুন। নিজের অবস্থান ও সামর্থ্যরে ব্যাপারে সচেতন থেকেই পরিকল্পনা ও সিদ্ধান্ত নিতে হয়। শুধু উপরে দেখা কিংবা শুধুই নিচে দেখার মাঝে লাভ নয়; বরং ক্ষতিই বেশি। নিজের ব্যাপারে পরিপূর্ণ সচেতনতাই সামনে এগিয়ে নিতে পারে।

অনেক বিকল্প যখন একসঙ্গে সামনে আসে, তার মধ্য থেকে সবচেয়ে গ্রহণযােগ্য, উপযুক্ত বিকল্পটি বেছে নেয়ার নাম সিদ্ধান্ত। জীবনের প্রত্যেকটি পদে, এমন হাজার বার আমাদের বিকল্প বেছে নিতে হচ্ছে। কখনাে আমরা সঠিকটা নিতে পারি, কখনাে হয়ে যায় ভুল। হয়তাে আপনি যে সিদ্ধান্তটা ভালাে বুঝবেন, কিন্তু তা গ্রহণ করতে পারছেন না, এমনটিও হতে পারে। নিজের মতের ওপর স্থির থাকা ভালাে, যদি সে মত সঠিক হয়।

পাহাড়, পর্বত, বৃক্ষরাজি শির উঁচু করে দাঁড়িয়ে আছে স্থির অস্তিত্বের দৃষ্টান্ত হিসেবে। স্থিরতাতেই কল্যাণ। ঘন ঘন মত বদলানাে বােকামি। খড়কুটোই শুধু উদ্দেশ্যহীনভাবে ভেসে চলে। তাই উদ্দেশ্য সুনির্দিষ্টকরণ এবং সিদ্ধান্তে অটলঅবিচল থাকতে দৃঢ় – বদ্ধসংকল্প হতে হবে, কঠিন প্রতিজ্ঞা নিতে হবে। এ ব্যাপারে চিন্তাভাবনা অযৌক্তিক। কথা কম বলা মন্দ নয়। তাই বলে পরামর্শবিহীন সিদ্ধান্ত গ্রহণ কিংবা প্রয়ােজনেও মুখ না খােলার অভ্যাসকে তাে কিছুতেই ভালাে বলতে পারি না।

তবে অতিরিক্ত কথা বলার অর্থই চিন্তা কম করা, যা কম বুদ্ধিমানেরাই করে থাকে। যে ক্ষুদ্র চিন্তা করে তার কাছ থেকে বৃহৎ কিছু আশা করা যায় না। আবার যে বড় চিন্তা করবে এবং চিন্তার আলােকে কর্মপ্রচেষ্টা চালাবে, সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা নিয়ে। নির্দিষ্ট লক্ষ্যপানে ছুটবে, সে ছােট থাকবেএটাও যুক্তিসঙ্গত হতে পারে না।

চিন্তা কোন মাপের, কোন পর্যায়ের সেটি নির্ণয় করতে পারলেই কোন মাপের মানুষ সেটি বােঝা অনেকটা সহজ হবে। ইচ্ছার শেষ নেই। সব ইচ্ছা পূরণ হওয়ার নয়। ইচ্ছা অপূরণ থাকে বলেই মানুষ আরাে বেঁচে থাকতে চায়। বেঁচে থাকতে চায় বলেই নানা কর্মপ্রচেষ্টা, তৎপরতা, সংগ্রাম ও বাস্তবতা।

যদি ইচ্ছাই না থাকে, তবে মানুষ বেঁচে থাকতে পারে না, জীবনে স্থবিরতা নেমে আসে, অনিশ্চিত হয়ে পড়ে জীবনের গতিপ্রবাহ। সিদ্ধান্তগুলাে কখনাে মামুলি বিষয়, আবার কখনােবা খুব গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ের ওপর হয়ে থাকে। একজন ব্যক্তি সকালবেলা ঘুম থেকে নাস্তায় কী খাবেন, কোন কাপড় পরবেনদ্ধান্ত নেয়ার পালা এবং তা নিজ নিজ থেকে শুরু হয় সি- অবস্থানভেদে কখনাে কখনাে রাষ্ট্রীয় সিদ্ধান্ত পর্যন্ত হতে পারে।

অর্থাৎ প্রত্যেকটা সময় সিদ্ধান্তের প্রয়ােজন হয়। কাকে ভােট দেব, কোন বিষয়ে পড়ব, কোন পেশা গ্রহণ করব, কোন ব্র্যান্ড পছন্দ করব, জিনিস কোনগুলাে কিনবহাজারটা প্রশ্নের ভিড়ে আমাদের সিদ্ধান্ত নিতে হয়। এ সিদ্ধান্ত গ্রহণের সময় আমরা প্রায়ই ইতস্তত করি, কালক্ষেপণ করি।

আবার কখনাে হুট করে সিদ্ধান্ত নিই, যা পরবর্তীকালে ভুল বলে প্রমাণিত হয়। কার্যকর সিদ্ধান্ত গ্রহণে আমাদের কিছু বিষয় মনে রাখতে হবে।

চিন্তাশক্তি : সিদ্ধান্ত গ্রহণের জন্য আমরা ব্যবহার করি আমাদের চিন্তাশক্তি। তাই সিদ্ধান্ত গ্রহণের পূর্বশর্ত হচ্ছে চিন্তাশক্তি শাণিত করা, তবে সময়মতাে সঠিক চিন্তা শেষ করে যিনি সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে পারবেন, তিনিই বুদ্ধিমান।।

বুদ্ধিমত্তা ও সিদ্ধান্ত গ্রহণ : বুদ্ধিমত্তা পরিমাপ করতে আধুনিক সংজ্ঞা প্রদান করা হয়। এতে বলা হয়, যিনি একই ধরনের কয়েকটি সম্ভাব্য সমাধানের মধ্য থেকে সর্বশ্রেষ্ঠটি দ্রুততম সময়ে বেছে নিতে পারেন, বুদ্ধি তত বেশি, সঠিক সিদ্ধান্ত গ্রহণ মানেই বুদ্ধিমত্তার পরিচয়।

চিন্তা ও আবেগ : চিন্তার ক্ষেত্রে আবেগকেও মূল্য দিতে হবে। তবে তা অবশ্যই যৌক্তিক হতে হবে। যে বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে হবে, তাকে দু’ভাবে দেখা যেতে পারে। একটি হচ্ছে পুরাে বিষয়টি সামগ্রিকভাবে মূল্যায়ন করে একটি একক সিদ্ধান্ত গ্রহণ অথবা ওই বিষয়টিকে ছােট ছােট ভাগে বিভক্ত করে প্রতিটি ভাগের জন্য আলাদা সিদ্ধান্ত নিয়ে এরপর মূল সিদ্ধান্তটি নিতে হবে।

প্রশ্নের উত্তর খুঁজুন : সিদ্ধান্ত গ্রহণের সময় যে বিষয়টি সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ, তা হলাে আপনার মনের প্রশ্ন। কে? কে নয়? কেন? কেন নয়? কীভাবে? কীভাবে নয়? কখন? কোথায়? কী? কোনটি? কোনটি নয়? প্রভৃতি প্রশ্নের উত্তর খুঁজুন। এরপর যৌক্তিকভাবে বিষয়টি সম্পর্কে স্বচ্ছ ধারণা তৈরি করতে হবে।

মনে রাখুন, আপনার সিদ্ধান্ত যেন শতভাগ যৌক্তিক হয়। মনে রাখবেন, পুরাে বিষয়টি যত তাড়াতাড়ি সম্পাদন করা যায়, ততই ভালাে। অনেক সময় অন্যের সঙ্গে আলাপের প্রয়ােজন হতে পারে। পরামর্শের প্রয়ােজন হতে পারে। সে ক্ষেত্রে নিজেকে ছােট করে দেখার কিছু নেই। খােলামন নিয়ে নির্ভর করা যায়, এমন মানুষের সঙ্গে পরামর্শ করতে পারেন।

এতে আপনার বিষয়টির অজানা দিকগুলাে আপনার সামনে আসতে পারে। এ থেকেও নিতে পারেন সঠিক সিদ্ধান্ত, তবে আপনার সিদ্ধান্ত আপনার নিজের। সবাই হয়তাে সিদ্ধান্তের বিভিন্ন দিক নিয়ে আলােচনা করবে, তার মধ্যে থেকে আপনাকেই সিদ্ধান্ত নিতে হবে। এ বিষয়ে কাউকে অপরাধী করার চিন্তা না থাকাই ভালাে। লজ্জা, সংকোচ আপনার সিদ্ধান্তকে ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে। তাই সিদ্ধান্ত হওয়া চাই দৃঢ়।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0মন্তব্যসমূহ

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন (0)

#buttons=(Accept !) #days=(20)

Our website uses cookies to enhance your experience. Check Now
Accept !