মঙ্গল কাব্য
দেবদেবীর মাহাত্ম নির্ভর ও দেবতাদের কাছে মঙ্গল কামনা করে রচিত কাব্য-ই মঙ্গলকাব্য। অন্যমতে, কাব্যগুলাে এক মঙ্গলবারে শুরু করে আরেক মঙ্গলবার পর্যন্ত গাওয়া হতাে বলে এগুলাে মঙ্গলকাব্য নামে পরিচিত। মঙ্গল কাব্যের ৩টি শাখা- ১. মনসামঙ্গল, ২. চণ্ডীমঙ্গল, ৩. অন্নদামঙ্গল। অপ্রধান শাখা ২টি- ১. ধর্ম মঙ্গল ২. কালিকা মঙ্গল। উল্লেখ্য- বিহারীলাল চক্রবর্তীর সারদামঙ্গল কাব্য মঙ্গলকাব্য নয়, এটি আধুনিক গীতিকাব্য।
মঙ্গলকাব্য রচনার কারণ- স্বপ্নেপ্রাপ্ত দেবীর আদেশ। মঙ্গলকাব্যের মােট কবির সংখ্যা ৬২ জন।
কাব্য | আদিকবি | প্রধান কবি |
চণ্ডীমঙ্গল | মাণিক দত্ত | মুকুন্দরাম চক্রবর্তী |
মনসামঙ্গল | কানা হরিদত্ত | বিজয়গুপ্ত |
অন্নদামঙ্গল | ভারতচন্দ্র রায় গুণাকর |
- মঙ্গলকাব্যের প্রাচীন ধারা মনসামঙ্গল। এর অপর নাম পদ্মপুরাণ ।
- ধর্মমঙ্গল কাব্যের আঠারাে শতকের শ্রেষ্ঠকবি ঘনরাম চক্রবর্তী।
- মধ্যযুগের সবচেয়ে প্রতিবাদী চরিত্র চাঁদসওদাগর ধর্মমঙ্গলের আদি কবি ময়ূর ভট্ট ।
- মঙ্গলকাব্য রচনার মূলে উল্লিখিত কারণ- স্বপ্নে দেবী কর্তৃক আদেশ লাভ।
- মনসামঙ্গলের আদি কবি কানা হরিদত্ত।
- এছাড়াও অন্যান্য রচয়িতা হলেন নারায়ণদেব, বিজয়গুপ্ত, বিপ্রদাস পিপিলাই, দ্বিজ বংশীদাস।
- বিপ্রদাস পিপিলাই রচিত মঙ্গলকাব্যের নাম- মনসাবিজয়।
- মনসামঙ্গল কাব্যকে ‘পদ্মপুরাণ’নামে অভিহিত করা হয়।
- কারণ মনসা দেবীর অপর নাম কেতকা বা পদ্মাবতী।
- চণ্ডীমঙ্গলের আদি কবি- মাণিক দত্ত (চতুর্দশ শতক)।
- চণ্ডীমঙ্গল ধারার প্রধান কবি- মুকুন্দরাম চক্রবর্তী (ষােড়শ শতক)।
- ‘অভাগা যদ্যপি চায় সাগর শুকায়ে যায়’- মুকুন্দরাম চক্রবর্তী।
- বারমাস্যা হলাে নায়িকার বারাে মাসের সুখ-দুঃখের বর্ণনা।
- অন্নদামঙ্গল কাব্য ধারার প্রধান কবি কৃষ্ণনগর রাজসভার কবি- ভারতচন্দ্র রায়গুণাকর।
- ধর্মমঙ্গল কাব্যের প্রধান কবি- ময়ূরভট্ট। কালিকা মঙ্গলের শ্রেষ্ঠ কবি রামপ্রসাদ সেন ।
- তিনি মূলত শাক্ত সঙ্গীত রচনার জন্য খ্যাত তার সঙ্গীতগুলােকে শাক্তপদাবলি বলা হয়।
- দ্বিজ বংশীদাসের জন্ম- কিশােরগঞ্জে, তিনি চন্দ্রাবতীর পিতা; চন্দ্রাবতী ছিলেন বাংলা সাহিত্যের প্রথম মহিলা কবি ও রামায়ণের প্রথম মহিলা অনুবাদক।
- মুকুন্দরাম চক্রবর্তীকে ‘কবিকঙ্কণ’ উপাধি দেন- জমিদার রঘুনাথ রায়।
- ভারতচন্দ্র রায়কে ‘গুণাকর’ উপাধি দেন নবদ্বীপ বা নদীয়ার রাজা কৃষ্ণচন্দ্র।
- তিনি কৃষ্ণনগর রাজসভার কবি ছিলেন।
- মঙ্গলকাব্য ধারার সর্বশেষ (১৮ শতক) কবি বা নাগরিক কবি- ভারতচন্দ্র রায় গুণাকর।
- আমার সন্তান যেন থাকে দুধে-ভাতে’- ভারতচন্দ্র রচিত অনদামঙ্গল কাব্যের চরিত্র ঈশ্বরী পাটনীর উক্তি।
- ১৭৬০ খ্রিস্টাব্দে অর্থাৎ পলাশী যুদ্ধের তিন বছর পর ভারতচন্দ্র মারা যান।
ভারতচন্দ্রের আরাে কিছু বিখ্যাত উক্তি
|