পরের কারণে স্বার্থ দিয়া বলি
এ জীবন মন সকলি দাও,
তার মত সুখ কোথাও কি আছে?
আপনার কথা ভুলিয়া যাও।
মূলভাব : আমরা প্রত্যেকে প্রত্যেকের সুখ-দুঃখের সমান অংশীদার হয়ে আছি।
সম্প্রসারিত ভাব : মানুষ সৃষ্টির সর্বশ্রেষ্ঠ জীব। উদরপুরে আহার করলেই মানুষ পশুর মত সুখে বিভোর হয়ে পড়ে না। তার জীবনে উচ্চতর সুখ আছে, আছে উচ্চতর লক্ষ্য। পরার্থে নিজের জীবন বিসর্জন দেয়া, পরের জন্য জীবন ধারণ করেই সে সুখ পায় এবং তাই তার একমাত্র লক্ষ্য। সামাজিক জীব হিসেবে মানুষ একে অপর হতে বিচ্ছিন্ন হয়ে জীবন যাপন করতে পারে না। তাকে পরের জন্য উদয়াস্ত পরিশ্রম করতে হয়। অপর দিকে স্বার্থপর মানুষ আর পশুতে কোন তফাৎ নেই। পশু যেমন শুধু তার উদরের কথা চিন্তা করে, স্বার্থপর মানুষও ঠিক তার নিজের কথাই চিন্তা করে। অথচ সৃষ্টির সেরা মানুষকে আল্লাহতায়ালা এমন স্বার্থপরতার ভাব নিয়ে বাস করার জন্য এ সংসারে পাঠাননি। এ পৃথিবীতে মানুষকে পাঠানো হয়েছে জন্ম থেকে মৃত্যু পর্যন্ত কর্মময় জীবন যাপন করতে এবং অপর ও প্রিয়জনের মঙ্গলের জন্য তাকে প্রাণান্ত পরিশ্রম করতে। প্রিয়জনের সুখ-শান্তি, ভাল-মন্দ, সামাজিক মানুষের উন্নয়ন, দেশ ও জাতির ভবিষ্যৎ উন্নয়নে মানুষকে আজীবন অক্লান্ত পরিশ্রম করতে হয়। এতেই নিহিত রয়েছে তার পরম সুখ, শান্তি ও স্বস্তি। এ পার্থিব জীবনে যে নিজেকে নিয়ে ব্যস্ত রয়েছে, সে মূলত তার জন্ম হতে মৃত্যু পর্যন্ত ব্যর্থতার পর্যবসিত রয়েছে। পক্ষান্তরে আমরা বলতে পারি যিনি অপরের স্বার্থে নিজের জীবন উৎসর্গ করেছেন, তার জন্মেই পকৃতপক্ষে সার্থকতায় পরিপূর্ণ।
মন্তব্য : অতএব, মানুষের জীবন জন্ম হতে মৃত্যু পর্যন্ত নিজের স্বার্থে ব্যস্ত না রেখে অপরের মঙ্গলের জন্য এবং জাতির মঙ্গলের জন্য উৎসর্গ করা উচিত।